ঢাকা মহানগরে চলাচল করা সব রিকশা আসছে নিবন্ধনের আওতায়। লাইসেন্স নিতে হবে চালককেও। রিকশাচালকের বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। রিকশার রং, কুশন প্রভৃতিতে থাকবে নতুনত্ব। মালিকরা ইচ্ছেমতো জমা আদায় করতে পারবে না। একই সঙ্গে দূরত্ব অনুযায়ী ট্রাফিক অঞ্চলভেদে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে ভাড়া।

এসব নিয়ম রেখে গত সোমবার (২১ মার্চ) ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল (নিয়ন্ত্রণ) প্রবিধান’-এর গেজেট জারি করা হয়েছে। দক্ষিণ সিটিও এমন প্রবিধান করতে যাচ্ছে বলে জানা যায়।

প্রবিধান অনুযায়ী, অঞ্চলভেদে রিকশাচালকদের পোশাকের রং ভিন্ন হবে। অযান্ত্রিক যানবাহন বা রিকশাচালকের কাছ থেকে মালিক দৈনিক সর্বোচ্চ কত টাকা ভাড়া (জমা) আদায় করতে পারবেন, তা করপোরেশন নির্ধারণ করে দিতে পারবে। কোনো রিকশায় দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির বেশি বহন করা যাবে না।

এছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করা বা নির্ধারিত জোনে নির্দিষ্ট দূরত্বে যেতে অস্বীকৃতি জানালে রিকশাচালককে জরিমানা করা যাবে। রিকশাচালকের বয়স ১৮ বছরের কম বা ৫০ বছরের বেশি হতে পারবে না।

এতে আরও বলা হয়েছে, রিকশার ভেতরে বা বাইরে কোনো রকম বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন বা অশ্লীল ছবি/চিত্র সাঁটানো যাবে না।

প্রবিধান অনুযায়ী, অনিয়মের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং নিবন্ধন-লাইসেন্স বাতিল ও রিকশা জব্দ করতে পারবে সিটি করপোরেশন।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মো. সেলিম রেজা বলেন, রিকশা বা অযান্ত্রিক যানবাহন নিয়ে তেমন কোনো বিধিবিধান ছিল না। প্রবিধানটি করা খুব দরকার ছিল, সেটি হয়েছে। আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে প্রবিধানের গেজেটও করেছি। আমরা এখন এটি ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের দিকে যাবো। প্রবিধানের আলোকে আমরা ব্যবস্থা নেবো। আমরা কিছু রিকশার লাইসেন্সও দেওয়া শুরু করছি।

তিনি বলেন, এই প্রবিধানের আওতায় অযান্ত্রিক যানবাহনকে আমরা একটা সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসবো। রিকশাচালকেরও লাইসেন্স লাগবে। আরও কিছু নতুন বিষয় এসেছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। আশা করছি ভালো কিছু হবে।

প্রবিধান অনুযায়ী, করপোরেশনের অঞ্চল বা ওয়ার্ডভিত্তিক ‘অযান্ত্রিক যানবাহন ব্যবস্থাপনা শীর্ষক কমিটি’ দায়িত্ব পালন করবে। কমিটির আহ্বায়ক হবেন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা/মেয়রের মনোনীত কর্মকর্তা/ওয়ার্ড কাউন্সিলর। সাত সদস্যের এই কমিটিতে শ্রমিক, রিকশা মালিক ও চালক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও থাকবেন।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) ফরিদ আহাম্মদ বলেন, অযান্ত্রিক যানবাহন নিয়ে আমরাও একটি প্রবিধান করছি। একটি খসড়া করা হয়েছে, খসড়াটি চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অংশে রাস্তাঘাট সরু। প্রচুর ঘোড়ার গাড়ি রয়েছে। উত্তরে রাস্তাঘাট বেশি প্রশস্ত। তাই আমাদের প্রবিধানটি উত্তরের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন হবে।